ভারত : ৩৫৩, ২১৭/৭ ডিক্লেয়ার
ওয়েস্ট ইন্ডিজ : ২২৫, ১০৮
.... বেদি থেকে সৌরভ কিংবা ধোনি কারও ঝুলিতে নেই এই কৃতিত্ব৷ তাই উঠে এল বিরাট রাজার কাছে৷ প্রথম ভারতীয় অধিনায়ক হিসেবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে দুটি টেস্ট জিতলেন তিনিই৷ শেষ দিনে ন’নম্বর উইকেট পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই ব্যাগ থেকে ডিএসএলআর ক্যামেরাটা বের করে ফেললেন অনিল কুম্বলে৷ এটা এখন ভারতীয় দলে নতুন ট্রেন্ড বলতে পারেন৷ স্মরণীয় মুহূর্তগুলো ক্যামেরাবন্দি করে রাখা আর কী! দু’দিন আগে ঋদ্ধিমানের সেঞ্চুরির সময় দায়িত্বটা সামির ছিল৷ এবার সেখানে কুম্বলে৷ জাদেজার বলে গ্যাব্রিয়েলের ক্যাচটা ডিপ উইকেটে ভুবি নিতেই ক্যামেরার ফ্ল্যাশের ঝলকানি৷
গ্যালারি থেকে বেশ কিছু প্রবাসী ভারতীয়র ‘ইন্ডিয়া…ইন্ডিয়া’ করে চিৎকার ভেসে আসছে৷ স্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে হাততালি দিচ্ছেন নির্বাচক সাবা করিম৷ বিরাট কোহলির এক গাল হাসি৷ রাহানে-শিখরদের শরীরী ভাষা বলে দিচ্ছিল, কতটা তৃপ্ত তাঁরা৷ হবে নাই বা কেন, চার ম্যাচের সিরিজে এক টেস্ট বাকি থাকতেই সিরিজ পকেটে৷ ধারাভাষ্যকাররা বারবার সেই পরিসংখ্যান আউড়ে চলেছেন৷ এর আগে কখনও একটার বেশি ম্যাচ জিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজে সিরিজ জেতেনি ভারতীয় দল৷ বিরাট-রাজার মুকুটে আরও একটা পালক৷
........ ম্যাচ বিশ্লেষণ করতে এসে গোমড়া মুখ করে ভিভ রিচার্ডস বলছেন, “সত্যিই খুব হতাশাজনক৷” একটা সময় কলার তুলে যে মাঠে মস্তানি করতেন, সেখানে হোল্ডারদের এমনভাবে আত্মসমর্পণ করতে দেখলে হতাশা আসবেই৷ পাশেই বসে অজয় জাদেজা৷ মাইক হাতে আসতেই বলে দিলেন, “আমি খুব খুশি৷ খুব খুশি৷” সত্যিই বিরাটদের এমন পারফর্ম করতে দেখলে গর্ব তো হবেই৷ শুক্রবার ভুবনেশ্বর কুমারের ওই স্পেলটা জয়ের স্বপ্ণ দেখাতে শুরু করেছিল৷ শনিবার ঘণ্টা পাঁচেকের মধ্যেই তা বাস্তবে পরিণত করলেন সামি-ইশান্তরা৷ অন্য কোনও অধিনায়ক হলে কী করতেন জানা নেই, তবে বিরাট আলাদা৷ অনেকটাই আলাদা৷ ভারতীয় টেস্ট দলের দায়িত্ব নেওয়ার প্রথম দিন থেকেই পরিষ্কার করে দিয়েছিলেন, যা কিছুই হয়ে যাক, তিনি রেজাল্ট চান৷ ওয়েস্ট ইন্ডিজকে আগের দিন ২২৫ রানে অলআউট করে দেওয়ার পর ড্রেসিংরুমে তাই বার্তাটা পৌঁছে গিয়েছিল হয়তো৷ যত দ্রূত সম্ভব রান তুলতে হবে৷ যাতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের দশ উইকেট তুলে নেওয়ার মতো সময় থাকে৷ শিখর-রাহুলরা আগের দিন সে-পথেই ছুটেছিলেন৷ শেষ দিন সকালে মিনিট চল্লিশেক ব্যাট করেই ডিক্লেয়ার করে দেন বিরাট৷ ভারত তখন ২১৭/৭! সব মিলিয়ে ৩৪৫ রানে লিড৷ এমনিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলটায় কোনও কেষ্ট-বিষ্টু নেই, যে আহামরি কিছু করে দেবে৷ চেস-হোল্ডাররা জামাইকাতে আটকে দিয়েছিলেন, কিন্তু প্রতি ম্যাচে যে তা হবে না, সেটা জানাই ছিল৷ আর বিরাট খুব ভাল করেই জানতেন, একটু চাপ দিলেই উইকেট আসবে৷ তাই শুরু থেকে সামনে তিন-চারজন ফিল্ডার দাঁড় করিয়ে দিলেন৷ গোটা ইনিংসে সেই চাপ কাটিয়ে আর বেরোতেই পারলেন না হোল্ডাররা৷ লাঞ্চের আগে সামি, ইশান্ত, ভুবিরা তিন উইকেট বের করে নিতেই জয়ের ছবিটা পরিষ্কার হচ্ছিল৷ লাঞ্চের পর আর দাঁড়াতেই দিলেন না ভারতীয় বোলাররা৷ সামির ঝুলিতে তিন উইকেট৷ ইশান্তের দুই৷ বাকিগুলো ভাগাভাগি করে নিলেন, ভুবি, জাদেজা, অশ্বিনরা৷ ওয়েস্ট ইন্ডিজ অলআউট ১০৮-এ৷ আর ২৩৭ রানে জিতে ভিভদের দেশে নতুন কীর্তি বিরাটদের৷
#WIvIND, #Virat #Kohli
No comments:
Post a Comment